ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম কি হালাল না হারাম জেনে নিন
বর্তমান সময়ে কম বেশি আমরা সকলেই ইউটিউব ব্যবহার করে থাকি।
কিন্তু বর্তমান সময়ে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করা যায় আপনি হয়তো শুনে থাকবেন।
আবার অনেকেই রয়েছে যা ইউটিউব থেকে মাসে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করে। তাদের মনে একটু প্রশ্ন জাগে যে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম কি হালাল না হারাম।
তারা জানতে চায়। তো বন্ধুরা আমরা আজকে আমাদের এই আইডি কেরে আলোচনা করব যে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করা জায়েজ কিনা। বা ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম কি হালাল না হারাম এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
তো বন্ধুরা এ বিষয়টি জানার আগে চলুন আমরা জেনে নেই যে ইউটিউব আমাদের কিভাবে টাকা দিয়ে থাকে বা ইউটিউব থেকে কিভাব ইনকাম হয়।
ইউটিউব থেকে কি ভাবে ইনকাম হয়
তো বন্ধুরা ইউটিউব থেকে ইনকাম অনেক ভাবেই হয় কিন্তু কম বেশি সকল ইউটিউবার youtube মনিটাইজ এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করেন।
ইউটিউব মনিটাইজ হলো আপনি যখন একটি ইউটিউবে চ্যানেল খুলেন তখন আপনাকে ইউটিউব একটি শর্ত দেয় সেই শর্ত যদি আপনি পূরণ করতে পারেন তাহলে আপনি ইউটিউব মনিটাইজ এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেন
শর্তগুলো হলো পূর্বের এক বছরের মধ্যে ১ হাজার সাবস্ক্রাইব এবং ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম আপনি যদি পূরণ করতে পারেন তাহলে আপনি ইউটিউব মনিটাইজ এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আর youtube মনিটাইজ এ যেভাবে টাকা ইনকাম হয়। বন্ধুরা যখন আপনি ইউটিউব মনিটাইজ পাবেন তখন আপনার ইউটিউব ভিডিওতে বিজ্ঞাপন শো হবে এবং সেই বিজ্ঞাপন যখন আপনার সাবস্ক্রাইবার টা দেখবে তখন আপনার ইনকাম হবে।
অর্থাৎ বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে ইউটিউব আপনাকে টাকা দিববে।
মূলত বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমেই ইউটিউব মনিটাইজ থেকে টাকা ইনকাম করা হয়।
তো বন্ধুরা চলুন জেনে নেই যে ইউটিউব মনিটাইজ এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম কি হালাল হবে না হারাম হবে।
ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম কি হালাল না হারাম

ইউটিউব থেকে আয় করা হালাল না কি হারাম—তা নির্ভর করে আপনি কীভাবে ইউটিউব থেকে আয় করছেন তার উপর।
ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি বিশ্লেষণ করলে নিচের দিকগুলো দেখুন।
ইউটিউব ইনকাম হালাল হওয়ার শর্ত কি
১, বিষয়বস্তু হালাল হতে হবে: ভিডিও কনটেন্ট যদি শিক্ষামূলক, তথ্য, বিনোদনমূলক হয় যা ইসলামসম্মত, রিভিউ, হালাল পণ্যের বা প্রোডাক্ট প্রচার ইত্যাদি হয়,
তাহলে সেটা সাধারণত হালাল ধরা হয়।
২ বন্ধুরা অশ্লীলতা মিথ্যা,গীবত বা হারাম। বা মানুষ ঠকানো কনটেন্ট হয় তাহলে সেটা থেকে ইনকাম হালাল হবে না। তাই সবকিছুই ইসলাম সম্মত হতে হবে।
আর যদি সবকিছু ইসলাম সম্মত হয় তাহলে সেখানকার ইনকাম হালাল হবে।
২, youtube থেকে আয়ের উৎস হালাল হতে হবে। আর যদি আপনি ইউটিউব মনিটাইজ বা স্পনসরশিপ থেকে আয় করেন তবে সে বিজ্ঞাপন গুলোর মধ্যেও যেন হারাম কোন কিছু না থাকে।
যেমন অশ্লীল ভিডিও বা অশ্লীল কোন নারীর ছবি ইত্যাদি। অর্থাৎ বিজ্ঞাপন গুলো ইসলামের দিক থেকে বৈধ হতে হবে।
আর বন্ধুরা ইসলামের দিক থেকে যদি বিজ্ঞাপন গুলো হালাল হয় তাহলে সেখান থেকে টাকা ইনকাম কর হালাল হবে।
আরো যদি অশ্লীল বা হারাম হয় তাহলে হারাম হবে।
ইউটিউব ইনকাম হারাম হওয়ার দিক
বন্ধুরা যদি আপনার ভিডিওটি নাচ, গান, অশ্লীলতা,ইসলামবিরোধী বিষয় থাকে। তাহলে সেখান থেকে ইনকাম হারাম।
হারাম পণ্য, প্রডাক্ট , অশ্লীল বিজ্ঞাপন থেকে ইনকাম করা হারাম।
বন্ধুরা আপনার কনটেন্ট ও আয়ের উৎস যদি ইসলামসম্মত হয়, তাহলে ইউটিউব থেকে আয় করা হালাল।
তবে সব সময় সচেতন থাকা জরুরি যেন আপনার কোনো কাজ অনিচ্ছাকৃতভাবে হারাম কিছুতে না পরিণত হয়।
ইউটিউব ইনকাম হালাল না হারাম
ইউটিউব মনিটাইজেশন থেকে আয় ইসলামে হালাল না হারামএ প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে আপনার ভিডিওর কনটেন্ট এবং প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনগুলোর বৈধতার উপর।
বন্ধুরা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
আপনার ভিডিও কনটেন্টের বৈধতা
আপনার ভিডিও যদি ইসলামী মূল্যবোধের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়, যেমন ইসলামিক শিক্ষা, নৈতিক জীবনধারা, বা সাধারণ জ্ঞানমূলক কনটেন্ট, তাহলে তা হালাল।
তবে, যদি ভিডিওতে মদ, জুয়া, অশ্লীলতা,বাজে গান বা অশালীন থাকে, তাহলে তা হারাম হবে।
আপনার ভিডিওর বিজ্ঞাপনের প্রভাব
বন্ধুরা আপনার ইউটিউবের অটো-জেনারেটেড বিজ্ঞাপনগুলোর উপর আপনার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে, আপনার ভিডিওতে এমন বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হতে পারে যা ইসলামে বিরোধী বা ইসলাম নিষিদ্ধ, যেমন অশ্লীলতা,মদ, জুয়া বা সুদভিত্তিক আর্থিক পণ্যসমূহ।
এমন বিজ্ঞাপন আপনার আয়কে হারাম করতে পারে।
এই বিষয়ে ইসলামিক ফতোয়া ও পরামর্শ
আল-ইফতা’ জর্ডান জানিয়েছে, যদি আপনি বিজ্ঞাপন ফিল্টার করে অশ্লীল কনটেন্ট এড়িয়ে চলতে পারেন, তবে আয় হালাল হতে পারে; তবে যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে আয় হারাম হবে এবং আপনি সেই আয় দান করে দিতে পারেন ।
ইসলামিক স্কলার ড. জাকির নায়েক বলেছেন, “ইউটিউবের বিজ্ঞাপনগুলোর মাধ্যমে আয় হারাম হতে পারে, কারণ আপনি বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না এবং অনেক সময় অশ্লীল কনটেন্ট প্রদর্শিত হয়” ।
সৌদি স্কলার আসিম আল-হাকিম বলেছেন, যদি আপনার ভিডিওতে অশ্লীলতা বা অশালীন দৃশ্য থাকে, তাহলে সেই আয় হারাম হবে ।
ইসলামে আয় হালাল হতে হলে তা অবশ্যই বৈধ উপায়ে অর্জিত হতে হবে। আপনি যদি আপনার কনটেন্ট এবং বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং তা ইসলামী নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়, তাহলে
ইউটিউব মনিটাইজেশন থেকে আয় হালাল না হারাম—এটি নির্ভর করে আপনি কী ধরনের কনটেন্ট তৈরি করছেন এবং সেই ইনকাম কী থেকে আসছে।
ইউটিউব ইনকাম হালাল হওয়ার শর্তসমূহ
1. বন্ধুরা আপনার কনটেন্ট হালাল ও ইসলামসম্মত হতে হবে।
যেমন নাচ,গান, অশ্লীলতা, গিবত, কিংবা ইসলামবিরোধী কিছু থাকলে তা হারাম ইনকাম হিসেবে গণ্য হবে।
2. এবং আপনার বিজ্ঞাপন হালাল হতে হবে।
ইউটিউবের মনিটাইজেশন থেকে যে বিজ্ঞাপনগুলো আসে, সেগুলো যদি হারাম পণ্যের যেমন সুদের, অ্যালকোহল, ভিত্তিক ব্যাংক, জুয়া বা অশ্লীলতা প্রচার করে হয়, তাহলে সেই ইনকাম নিয়ে দ্বিধা থাকে।
সাবধানতা
আপনি যদি কনটেন্ট পুরোপুরি হালাল রাখেন এবং চেষ্টা করেন যেন আপত্তিকর অ্যাড না আসে (যদিও তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না), তাহলে অধিকাংশ আলেমের মতে এটি মাকরুহের কাছাকাছি অবস্থায় পড়ে—তবে পরিষ্কার হারাম নয়।
এছাড়াও আপনি ইউটিউব থেকে হালাল ইনকাম করতে পারেন। নিচে আমি কয়েকটি উপায় শেয়ার করব
১, স্পনসরশিপ করে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করতে পারেন।
২, নিজের পণ্যের মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করতে পারেন।বা হালাল সাবস্ক্রিপশন মডেল ব্যবহার করা।
আমাদের শেষ কথা
বন্ধুরা আশাকরি আপনারা আপনাদের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে তাহলে কমেন্ট করে জানান।
আর আপনি চাইলে সোশ্যাল মিডিয়া আর্টিকেলটি শেয়ার করতে পারেন।
এবং আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানান।
আরো পড়ুন
বন্ধুরা আপনি যদি অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে আপনি আমার এই আর্টিকেল গুলো পড়তে পারেন।
- ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কত টাকা লাগবে – ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কি কি লাগে
- বিকাশ থেকে টাকা ইনকাম করার কার্যকর ৫টি উপায় | বিকাশ দিয়ে ইনকাম
- ফেসবুকে কত ফলোয়ার হলে টাকা পাওয়া যায় (ফেসবুক ইনকাম)
- ফ্রি টাকা ইনকাম apps – টাকা ইনকাম করার অ্যাপ
- বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করুন অনেক সহজে (২০২৫)
- ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম? ইউটিউব শর্টস মনিটাইজেশন নিয়ম 2025