বন্ধুরা আপনাদের যাদের টিকটক আইডি রয়েছে এবং মোটামুটি কিছু ভালো ফলোয়ার আছে! কিন্তু আপনারা এখনো টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করার ট্রিক্স খুঁজে পাচ্ছেন না মূলত তাদের জন্যই আজকে এই আর্টিকেল টি তৈরি করা হয়েছে।
টিকটক থেকে অনেক উপায়ে টাকা আয় করা যায়। আজ কাল বিশ্বব্যাপী অসংখ্য শর্ট ভিডিও ক্রিয়েটররা টিকটক থেকে আয় করে জীবিকা অর্জন করছেন, আপনি যদি একজন শর্ট ভিডিও ক্রিয়েটর হন তাহলে আপনিও টিকটক কে আপনার একটি আয়ের উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
আপনার টিকটক একাউন্টে যথেষ্ট ফলোয়ার এবং নিয়মিত ভিউজ আসে তাহলে খুব সহজে আপনিও টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আপনারা আজকে আমার এই কনটেন্ট থেকে জানতে পারবেন টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করে কিভাবে এবং টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করার বিভিন্ন ধরনের উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বন্ধুরা টিকটক নামক শর্ট ভিডিও মেকিং প্লাটফর্মকে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিকভাবে অনলাইন জগতে লঞ্চ করা হয়। যা মাত্র ৩ বছর পর এই টিকটক নামক শর্ট ভিডিও মেকিং প্লাটফর্ম টি একটি বিশ্বব্যাপী অনেক অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করে থাকেন।
আপনারা এই টিকটক নামক অ্যাপটি ওপেন করলেই পেয়ে যান বিভিন্ন ধরনের গান ও সংস্কৃতি ভিডিও থেকে শুরু করে ডান্স ও ফটোশট ভিডিও ইত্যাদি ভরপুর শর্ট ভিডিও।
তাই আজকাল কম বেশি সবারই মনে একটি প্রশ্ন জাগে যে – ছোট ছোট ইউজাররা প্রতিনিয়ত টিকটক এ শর্ট ভিডিও আপলোড করছেন এবং ভিডিও তৈরি করার জন্য সময় নষ্ট করছেন । তার পরিবর্তে তারা কি পেতেছে? তবে আমি আমার মতে এই প্রশ্নের দিবো যে – ছোট ছোট সর্ট ভিডিও টিকটক নামক অ্যাপে আপলোড করতে পারলেই টিকটক থেকে কচকচে নগদ টাকা ইনকাম করা অনেক সহজ।
টিকটক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়?
আজকাল পুরো বিশ্বজুড়ে অনলাইন জগতে এই প্রশ্নটি বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে। তার কারণ হচ্ছে কেননা আজকাল অনেক ছোট ছোট কনটেন্ট ক্রিয়েটররাই টিকটক এ শর্ট ভিডিও আপলোড করে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করার স্বপ্ন দেখছে।
তবে আপনিও যদি এই বিষয়টি নিয়ে অনলাইন জগতে যাচাই-বাছাই করার উদ্দেশ্য নিয়ে আমার এই আর্টিকেল টি পরার জন্য চলে এসেছেন । টিকটক এ শর্ট ভিডিও তৈরি করে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করার প্রত্যেকটি উপায় নিয়ে আজকে আমার এই কনটেন্টটিতে আমরা আলোচনা করব।
আপনাদের মনে রাখা ভালো, যেই সকল কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের হাজার হাজার ফলোয়ার রয়েছে, তারা কিন্তু নামি দামি কিছু বড় বড় ব্রান্ডের সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়ে গেছেন। এর ফলে কিছু গিফট, অর্থ বিনিময়ে দেওয়া হয় তাদের কে।
এখন এই সময়ে এসে আপনিও যদি টিকটক কে কাজে লাগিয়ে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করতে চান , তাহলে আপনাকে নিচে দেওয়া টিপস গুলো অনুসরণ করে আপনার ব্যাংক একাউন্ট ভরাট করে নিতে পারবেন খুব সহজেই।
আমার মতামতে টিকটকে শর্ট ভিডিও আপলোড করে রাতারাতি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি দের কাতারে যাওয়া টা সম্ভব না তবুও, নিয়মিত ভাবে অনলাইন জগতে কাজ করে গেলেই হাজার হাজার টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
টিকটকে ভিডিও দেখে টাকা ইনকাম? বা ভিডিও আপলোড করে টিকটক থেকে টাকা ইনকাম?
শর্ট ভিডিও তৈরি এবং আপলোড করার জন্য টিকটক নামক অ্যাপ্লিকেশন টি কনটেন্ট ক্রিয়েটরদেরকে কোন ধরনের ডলার বা টাকা দিয়ে থাকেন না। তবে টিকটক নামক এপ্লিকেশনের মধ্যে ‘ক্রিয়েটিভিটি প্রোগ্রাম’ এই নামের একটি প্রগাঢ় চালু করা হয়েছে। তাতে অংশগ্ৰহন কারিরা কনটেন্ট ক্রিয়েটর দের ফান্ডিং করা হয়ে থাকে।
তাই আমি আপনাদের কে একটা বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে রাখি । আপনাদের শর্ট ভিডিও গুলিতে আসা ভিউজ এর পরিমাণ, এনগেজমেন্ট রেট ও শর্ট ভিডিও রিয়েল অথেন্টিসিটি কি রকম সেটার উপর নির্ভর করে টিকটক ডলার বা টাকা নির্ধারণ করে থাকেন।
টিকটকে কত ভিউতে কত টাকা?
আমরা জানি টিকটক এ আপলোড করা ভিডিও- তে আসা প্রতি ২০০০ ভিউজ এর জন্য প্রায় ০.০৪/০.০৮ ডলার অফার করে থাকেন টিকটক অ্যাপ্লিকেশন টি । যা বাংলাদেশের টাকার মূল্য হিসেবে বাংলাদেশি ব্যাংক এ কনভার্ট করতে গেলে দেখা যায় ০.০৪ ডলার = ৪.৮ টাকা / ০.০৮ ডলার = ৯.৬ টাকা ।
টিকটক থেকে ১ মাসে কত টাকা ইনকাম করা যেতে পারে?
আপনি একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর আপনি টিকটক থেকে এক মাসে কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন সেটা আপনার টিকটক এ কনটেন্ট তৈরি করার কাজ এর উপর নির্ভর করবে।
যেমন ধরুন আপনি প্রতিদিন একটি করে শর্ট ভিডিও টিকটকে আপলোড করলেন, আর আপনার ওই শর্ট ভিডিওটিতে ১ মিলিয়ন ভিউজ আসলো আপনি আপনার ওই এক মিলিয়ন ভিউজ এর থেকে টিকটক কোম্পানি আপনাকে ২০ ডলার থেকে ৪০ ডলার পর্যন্ত অফার করে থাকবেন। এখন আপনি দিনে কয়টি ভিডিও আপলোড করবেন সেটা আপনার উপর নির্ভর করবে।
টিকটক থেকে ইনকাম করার জন্য কতগুলো ফলোয়ার এর দরকার হয়?
টিকটক ব্যবহার করি কনটেন্ট ক্রিয়েটররা টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করতে চাইলে তাদের টিকটক একাউন্টে নিম্নতম ১০০০ জন ফলোয়ার এর দরকার হয়ে থাকে।
তাই আপনি যদি আপনার টিকটক একাউন্ট দিয়ে অনলাইনে টিকটক এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে আপনাকেও আপনার টিকটক একাউন্ট এ ১০০০ জন ফলোয়ারের দরকার হবে।
আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট অথবা ফেসবুক পেজ থেকে ফলোয়ার কিনে নিতে পারবেন, এবং ওদের ইনবক্সে কথা বলে ডিল ফাইনাল করে আপনি পেমেন্ট করবেন ওরা আপনাকে ১০০০ প্লাস ফলোয়ার করে দিবে।
টিকটক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়? সেরা ১০টি উপায়
টিকটক থেকে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করার সেরা ১০ টি উপায় নিচে উল্লেখ করা আছে-
- অন্যের প্রডাক্ট বিক্রি করুন,
- ব্যান্ড পার্টনারশিপ,
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করুন,
- টিকটক এ রেফার করুন,
- আর্টিস্ট প্রোমোট করুন,
- সাবস্ক্রাইবার টিম তৈরি করুন,
- ভিউয়ারদের থেকে টিপস সংগ্রহ করুন,
- স্পনসর্ড পোস্ট করুন,
- লাইফ স্ট্রিম করুন এবং ভার্চুয়াল গিফট সংগ্রহ করুন,
- টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ড প্রোগ্রামে যোগ দিন,
চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক, টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করার প্রত্যেকটি উপায় সম্পর্কে।
১. অন্যের প্রডাক্ট বিক্রি করুন :
ধরুন আপনি আপনার টিকটক একাউন্ট টি ফ্যাশন – প্রডাক্ট এর উপর নির্ভর করেছেন, তাহলে আপনি আপনার ওই টিকটক অ্যাকাউন্ট টি দিয়ে একটি বিজনেস প্লাটফর্ম তৈরি করতে পারবেন। কিন্তু আপনি সেটা কিভাবে করবেন?
প্রথমে আপনি যেটা করবে সেটা হলো আপনার নিকটস্থ একটা গার্মেন্টসে অথবা একটি বড় দোকান এ যেতে হবে, তার পর আপনি ওই গার্মেন্টসের সুপারভাইজার অর্থাত্ ম্যানেজার এর সাথে কথা বলবেন যে আপনার গার্মেন্টসের অবস্থা কি রকম।
মানে আপনার গার্মেন্টসের প্রডাক্ট অনেক ভালো কিন্তু আপনার গার্মেন্টসের প্রডাক্ট তো মার্কেট এ ক্রেতারা ক্রয় করতে চাচ্ছে না আবার এদিকে আপনাদের প্রডাক্টের কোয়ালিটি অনেক ভালো অনেক কোয়ালিটি ফুল প্রডাক্ট।
তখন দেখবেন আপনাকে গার্মেন্টসের ম্যানেজার এমনিতেই বলে দিচ্ছে, হ্যাঁ স্যার আমাদের গার্মেন্টসের প্রডাক্ট অনেক ভালো। কোয়ালিটি ফুল প্রডাক্ট তবুও বাজারে ক্রেতারা ক্রয় করতে চান না কেন?
তখন আপনি বলবেন যে দেখেন আমার একটা টিকটক অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং সেখানে মোটামুটি ভালো কিছু ফলোয়ার আছে আপনারা চাইলে আমি আপনাদের প্রডাক্ট সেল করে দিতে পারি। আর আপনারা তো যানেই যে বর্তমান এ পুড়ো বিশ্বজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোর মধ্যে এক নাম্বারে রয়েছে টিকটক।
যদি ওরা রাজি হয়, তাহলে আপনি ওদেরকে বলবেন যে আমি আপনাদের প্রোডাক্ট সেল করে দিব, তার পরিবর্তে আপনারা আমাকে কি দেবেন। তখন দেখবেন ওরা আপনাকে বিভিন্ন ধরনের অফার করতেছে আর সে অফার অনুযায়ী আপনি একটা অফার বেছে নিবেন যে অফারে আপনি বেশি লাভজনক হতে পারবেন।
তারপর ওই গার্মেন্টস এর কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে একটি শর্ট ভিডিও তৈরি করবেন আর সেই ভিডিওটি আপনার টিকটক আইডিতে আপলোড করে দেবেন, আর হ্যাঁ আপনি চাইলে যে ভিডিওটি তৈরি করছেন ওই ভিডিও তে প্রত্যেকটি প্রোডাক্ট এর প্রাইজ একটু বেশি বেশি করে ধরে নিতে পারেন তাতে আপনার ব্যবসায় অনেক লাভজনক হবেন।
কি কি প্রোডাক্ট সেল করবেন তা নিয়ে নিচে কিছু আইডিয়া দেওয়া আছে_
মনে রাখা ভালো- আপনি যে সকল প্রোডাক্ট এর শর্ট ভিডিও তৈরি করবেন ওই সকল প্রোডাক্টের নিশ্চয়ই জনপ্রিয়তা অনেক বেশি থাকতে হবে যেমন_
- ছেলেদের স্টাইলিশ টি-শার্ট বা পোলো শার্ট
- ছেলেদের স্টাইলিশ প্যান্ট
- ছেলেদের স্টাইলিশ ওয়ালেট/মানিব্যাগ
- ছেলেদের স্টাইলিশ চশমা
- ছেলেদের স্টাইলিশ হাত ঘড়ি
- মেয়েদের স্টাইলিশ বোরকা
- মেয়েদের স্টাইলিশ ওয়ালেট/সাইটব্যাগ
- মেয়েদের স্টাইলিশ শাড়ি
- মেয়েদের স্টাইলিশ ব্রেসলেট
- ছেলে এবং মেয়ে স্টাইলিশ উভয়ের জুতা
আপনি চাইলে আরো অনেক ধরনের সুন্দর সুন্দর কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে সেল করতে পারেন তবে সেটার খুবই জনপ্রিয়তা থাকতে হবে এবং ফলোয়ারদের পছন্দনীয় হতে হবে।
আর সেই ভিডিওটি যখন ভিউয়ার দের সামনে যাবে তখন ভিউয়াররা সেই প্রোডাক্ট সম্পর্কে আপনার সাথে যোগাযোগ করবে এবং প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইবে। কিন্তু কিভাবে যোগাযোগ করবে? তার জন্য আপনি আপনার whatsapp নাম্বার টিকটক এর বায়োতে দিয়ে দিবেন।
আপনি ওই প্রোডাক্টের ভালো কিছু গুণাবলী ভিউয়ার দেরকে জানাবেন যাতে করে ভিউয়াররা ওই প্রোডাক্টটি ক্রয় করার জন্য আরও বেশি আগ্রহী হয়।
আর এরকম করেই আপনার টিকটক আইডি টি একটি বিজনেস প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এসব কারণেই প্রোডাক্ট বিক্রি করার সেরা একটি প্ল্যাটফর্ম হতে পারে টিকটক।
২.ব্যান্ড পার্টনারশিপ :
বন্ধুরা টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করার আরেকটি উপায় হচ্ছে ব্র্যান্ড পার্টনারশিপ, ব্র্যান্ড পার্টনারশিপ কি? ব্র্যান্ড পার্টনারশিপ হচ্ছে আপনি একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে অনেক নামি দামি একটা ব্র্যান্ডের সাথে অংশীদারিত্ব করা।
যদি আপনি কোন রকম ভাবে অংশীদারিত্ব করতে পারেন তাহলে তো হাজার হাজার টাকা ইনকাম করা একদম গ্যারান্টি! তবে একটা বিষয় মাথায় অবশ্যই রাখতে হবে।
এই ব্যান্ড পার্টনারশিপ উপায়টি টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করার সবচেয়ে সেরা একটি উপায় হলেও, ‘কানেকশন’ যার বেশি থাকবে সেই এক মাত্র পন্থার সদ্ব্যবহার করতে পারবেন অনেক বেশি।
অর্থাৎ ছোট ছোট কনটেন্ট ক্রিয়েটররা টিকটক এর মার্কেটপ্লেস এ একাধিক ভাবে বড় বড় ব্র্যান্ড গুলো পেয়ে যাবেন অংশীদারিত্ব করার জন্য।
কিন্তু আপনি তো টিকটক থেকে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করতে চান তাই আপনাকে ভালো এবং সঠিক একটা ব্যান্ড বেচে নিতে হবে।এরপর আপনাকে ওই ব্যান্ডের সাথে যত বেশি সম্ভব তত বেশি সংযোগ বজায় রাখতে হবে।
এবং তাদের প্রডাক্ট গুলোর সেল অনেক বেশি বাড়াতে হবে যতটুকু আপনার সামর্থ আছে সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে এবং তা প্রমাণ ও করতে হবে।
মাথায় অবশ্যই রাখতে হবে, টিকটক এ মার্কেটপ্লেস ব্রাউজ করে ছোট ছোট কনটেন্ট ক্রিয়েটররা টিকটক থেকে একটি উপযুক্ত ব্র্যান্ড খুঁজে নিতে পারবেন। আবার অনেক গুলো ব্র্যান্ড রয়েছে তাদের প্রডাক্ট বিক্রি করার জন্য অনেক অনেক ক্রিয়েটররা উপলদ্ধ আছে আপনি সেটাও দেখতে পারবেন।
অর্থাৎ আলোচ্য বিষয়, টিকটক নামক শর্ট ভিডিও মেকিং প্লাটফর্মের মার্কেটপ্লেস হচ্ছে একটি ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে কাজ করে টিকটক থেকে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করতে পারেন।
৩. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করুন:
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? ধরুন আপনি যে কোন ধরনের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রডাক্ট অথবা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে প্রোমোট বা বিক্রির ব্যবস্থা কে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়।
এক্ষেত্রে সাধারণত আপনাকে প্রতিটি প্রডাক্ট সেল করার মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ এ কমিশন দেওয়া হবে। অর্থাৎ আপনি যদি কোন একটি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের প্রডাক্ট অথবা সেবা বিক্রি করে দেন। তা, হলে ওরা আপনাকে ওই পন্য টি বিক্রি করার উপর নির্ভর করে আপনাকে কিছু কমিশন দেবেন।
আর একটু সহজ ভাবে বলতেছি, যে ধরুন আপনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন সপ দারাজ এ থাকা আপনার অ্যাফিলিয়েট একাউন্ট এর মাধ্যমে আপনি একটি টিভি সেল করলেন যার প্রাইস হচ্ছে ২৫,০০০ টাকা। এখন আপনি যদি ওখান থেকে কমিশন পান ৫% তাহলে ওই টিভি টি বিক্রি করে আপনার আয় হবে ১২৫০ টাকা।
এক্ষেত্রে অবশ্যই জেনে রাখবেন, যে কম্পানি যেরকম কমিশন দেবেন আপনি সেই কম্পানির থেকে সেই রকম কমিশন পাবেন। বর্তমানে ব্লগার, ইউটিউবার, ফেসবুক পেজ এবং ন্যাশনল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এই সকল পদ্ধতি গুলোকে ব্যাবহার করে বিভিন্ন ধরনের প্রডাক্ট এবং সার্ভিস তারা তাদের প্ল্যাটফর্মে প্রচার করে থাকে। এর বিনিময়ে কম্পানি গুলো তাদেরকে কিছু কমিশন বা নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ দিয়ে থাকেন।
৪. টিকটকে রেফার করুন | টিকটকে রেফার করে ইনকাম
আপনি যদি টিকটক থেকে অনেক সহজেই টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই টিকটক এ রেফার করতে হবে। আর এই রেফার করার জন্য আপনাকে লাগবে কিছু স্মার্টফোন যা এখন কার যুগে কোন ব্যাপারই না।
কারন বর্তমান যুগে ম্যাক্সিমাম পরিবারেই কম বেশি সব সদস্যের কাছে স্মার্ট ফোন রয়েছে আর আপনি চাইলে আপনার পরিবারের সদস্যদের, আত্মীয়স্বজনের অথবা বন্ধু-বান্ধবদের স্মার্টফোনটি দিয়েই টিকটক থেকে রেফার এর মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
তাই আপনাদের মনে অনেকেরই প্রশ্ন যে রেফার কি? রেফার হচ্ছে আপনি যেকোনো একটি প্রোডাক্টের মার্কেটিং করে নতুন ব্যবহারকারী বানানো। অর্থাৎ আপনি যদি বিভিন্ন উপায়ে মার্কেটিং করে টিকটক এ কিছু নতুন ইউজার আনতে পারেন তাহলে টিকটক থেকে আপনি একটা ভালো এমাউন্ট গিফট পাবেন।
গত কয়েক বছরে যারা যারা টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করেছিল মূলত তারাই এই টিকটক এ থাকা রেফারের মাধ্যমে ইনকাম করেছিলেন।
অর্থাৎ টিকটক এর পক্ষ থেকে আপনাকে একটি রেফার লিংক দেওয়া হয়। কোন নতুন ইউজার যদি টিকটকে একাউন্ট খুলতে চায়, তাহলে আপনার ওই রেফার লিংক থেকে একাউন্ট খুলে দিলেই আপনি পেয়ে যাবেন টিকটক এর পক্ষ থেকে ১/১.৫ ডলার পর্যন্ত, যা প্রায় বাংলা টাকায় আপনি পেয়ে যাবেন ১১৮ টাকা থেকে ১৭৭ টাকা পর্যন্ত কমিশন।
আপনি যদি টিকটক থেকে একটি রেফার করলেই পেয়ে যান ১১৮ টাকা থেকে ১৭৭ টাকা পর্যন্ত কমিশন। তাহলে আপনি দিনে কয়টা পর্যন্ত রেফার করবেন সেটা আপনার উপর নির্ভর করবে। ধরুন আপনি দিনে ৩ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত রেফার করলেন, তবে আপনি একদিনে ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত টিকটকে রেফার করে ইনকাম করতে পারবেন।
জেনে রাখা ভালো, বর্তমানে টিকটক তাদের রেফার সিস্টেম টি বন্ধ করে রেখেছে। তবে আশা করা যায় খুব শীঘ্রই আবার এই রেফার সিস্টেম টি চালু করবে টিকটক।
৫. আর্টিস্ট প্রোমোট করুন:
বর্তমানে বাংলাদেশের আর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ অনেক হাই লেভেলে রয়েছে। এর ফলে শিল্পীরা নিজেদের শিল্পকর্ম ভাই করতে টিকটক এর দিকে অনেক এগিয়ে আসছে। আর আসবেই না কেন, কারণ টিকটক তো বর্তমান অনলাইন জগতে একমাত্র শর্ট ভিডিও প্লাটফর্ম যা বিশ্বব্যাপী অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।
তাই শিল্পীরা আর অন্য কোন গণমাধ্যমকে বেছে না নিয়ে টিকটক এর মত একটি সেরা শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্ম কে বেছে নিয়েছেন। কারণ অন্য কোন প্ল্যাটফর্মে তত বেশি লোকজন ভিড় করে না যা টিকটক এর ভিড় করে।
তাই কোন রকম ভাবে যদি শিল্পীরা একবার টিকটক এ আর্ট ভাইরাল করতে পারে তাহলে তো কোন ব্যাপারই না একজন বড় ধরনের শিল্পী হওয়ার।
আমি আপনাকে সাজেস্ট করব যে আপনি যদি আর পছন্দ করে থাকেন অথবা ভালো আর্ট করতে পারেন তাহলে আপনি টিকটক এ সেটা প্রচার করুন আর একবার যদি আপনার আর্ট কোনরকম ভাবে ভাইরাল হয়ে যায় তাহলে আপনিও হতে পারেন একজন বড় ধরনের আর্টিস্ট।
তখন মানুষ আপনার কাছে আসবে বিভিন্ন ধরনের ওয়ালমেট এর ডিজাইন আর্ট করতে আর আপনি এক একটা ডিজাইন আর্ট করার জন্য ম্যাক্সিমাম কিছু টাকা নিবেন তাহলে আপনি টিকটক থেকে আর্টিস্ট এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
৬. সাবস্ক্রাইবার টিম তৈরি করুন:
প্রথমেই আমি বলব আপনি যদি কোন রকম ভাবে একটি সাবস্ক্রাইবার টিম তৈরি করতে পারেন তাহলে আপনি অনায়াসে একদিনে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।
কিন্তু কিভাবে? প্রথমেই আপনি একটা ফেসবুক গ্রুপ খুলবেন ওই গ্রুপে যত বেশি সম্ভব মেম্বার এড করবেন। সর্বনিম্ন মেম্বার এক হাজার থেকে ১৫০০-র মধ্যে হতে হবে তার কারণ বর্তমানে যেই ছোট ছোট ইউটিউব চ্যানেল গুলো আছে ওই ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে সাবস্ক্রাইবারের শট।
আপনি যদি ১০০০ থেকে ১৫০০ মেম্বার এড করতে পারেন তাহলে আপনি একদিনে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন অনায়াসেই।
বর্তমান সময়ের যে ছোট ছোট ইউটিউবার গুলো রয়েছে ওগুলো বর্তমানে সাবস্ক্রাইব পাওয়ার জন্য অত বেশি সময় অথবা পরিশ্রম দিতে চায়না তাই অনেকেই এখন সাবস্ক্রাইবার কিনে নিতেছে।
আপনি প্রথমেই একজন ইউটিউবার এর সাথে ডিল করবেন যে আমি আপনাকে ১০০০ প্লাস সাবস্ক্রাইব করে দিব কিন্তু আমাকে প্রতিটি সাবস্ক্রাইব এর মূল্য মাত্র ২ টাকা করে দিতে হবে। আর এরকম ভাবেই যদি সাবস্ক্রাইব করে দিয়ে দিনে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা যায় তাহলে আর লাগে কি।
তাই আমি আপনাদেরকে সাজেস্ট করব যে আপনারা সাবস্ক্রাইবার টিম তৈরি করে টিকটক থেকে এক দিনে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব।
৭. ভিউয়ারদের থেকে টিপস সংগ্রহ করুন:
আপনারা কি জানেন? যদি কোন ক্রিয়েটরের কনটেন্ট পছন্দ হয়ে থাকে তাহলে ফলোয়াররা ক্রিয়েটর দেরকে কিছু টিপস বা অনুদান পাঠাতে পারে।
যদিও, ভিডিও ভিউ করেছেন এমন প্রত্যেক জনকেই টিপস দিতে হবে সেটা কিন্তু একদমই না। ফলোয়াররা নিজেদের ইচ্ছা অনুসারে যেকোনো ধরনের টাকা অথবা টিপস হিসেবে দিতে পারেন।
তাই আমি আপনাদেরকে রিকুয়েস্ট করব বেশি বেশি পরিমাণে টিপস পাওয়ার জন্য ক্রিয়েটরদের ফলোয়ার হিসেবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি।
৮. স্পনসর্ড পোস্ট করুন:
স্পন্সরড পোস্ট হচ্ছে কোন একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করা পোস্ট। অর্থাৎ বিজ্ঞাপন প্রচার করা পোস্ট গুলোকে স্পন্সরড পোস্ট বলা হয়ে থাকে।
বন্ধুরা যে কোন ন্যাশনাল মিডিয়া অ্যাপের মতোই টিকটকেও স্পন্সরড পোস্ট এর মাধ্যমে আয় করার সুযোগ রয়েছে। বর্তমান সময়ের বিভিন্ন ব্র্যান্ড কম্পানি গুলো তাদের প্রডাক্টের প্রমোশন চালাতে স্পন্সরড পোস্ট এর মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের হাজার হাজার টাকা অফার করে থাকে।
বাংলাদেশ ও অনেক বড় বড় ব্রান্ড কোম্পানি গুলো তাদের স্পন্সরড পোস্ট করার মাধ্যমে টিকটক কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের কে অনেক অনেক টাকা অফার করে থাকেন। যদি আপনার টিকটক একাউন্টে যথেষ্ট ফলোয়ার থাকে তাহলে আপনিও এই ধরনের স্পন্সরড ডিল থেকে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
এছাড়া অনেক নামিদামি ব্রান্ডগুলো আপনাকে পার্টনারশিপ হিসেবে যোগদান করতে আগ্রহী হতে পারে। যা থেকে আপনি অনেক মোটা অঙ্কের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
৯. লাইফ স্ট্রিম করুন এবং ভার্চুয়াল গিফট সংগ্রহ করুন:
বর্তমান সময়ে টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করার আর একটি অন্যতম বিশেষ ফিচার হলো ‘ভার্চুয়াল গিফ্টিং’। এক্ষেত্রে আপনি যদি উপহার পেতে চান তাহলে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের লাইফ স্ট্রিমিং এর মাধ্যমে ফলোয়ার বেসে মনোরঞ্জন করে নিতে হবে।
ভার্চুয়াল গিফট হিসেবে বর্তমানে অনেকেই কিছু অর্থ প্রদান করে থাকেন। অর্থাৎ আলোচ্য ফিচার গলি ব্যবহার করে বর্তমান সময়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাবে।
১০. টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ড প্রোগ্রামে যোগ দিন:
আপনি টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ড প্রোগ্রামে যোগদান করে টিকটক থেকে খুব সহজেই টাকা ইনকাম করতে পারবেন।২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে এই প্রোগ্রামের অধীনে ক্রিয়েটরদের ফান্ড দেওয়া হয়েছে।
তবে ক্রিয়েটর ফান্ড থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য আপনাকে দুইটি শর্ত অবশ্যই পুরন করতে হবে।
- আপনাকে প্রথম এক মাসের ব্যবধানে ১০,০০০ জন ফলোয়ার জোগাড় করতে হবে।
- ভিডিওতে ১,০০,০০০ ভিউ পেতে হবে।
আর আপনি যদি এই দুটি শর্ত পূরণ করতে পারেন তাহলে টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ড প্রোগ্রাম থেকে টাকা উপার্জন করার যোগ্যতা অর্জন করবেন।
তবে আপনি একজন ‘রিয়েল টিকটক ক্রিয়েটর’ হওয়ার জন্য আরো কয়েকটি যোগ্যতার সিঁড়ি পাড়ি দিতে হবে। তা নিয়ে নিচে কিছু তথ্য দেওয়া হল-
- টিকটক ক্রিয়েটিভিটি প্রোগ্রামের অধীনে সাইন আপ করার জন্য অবশ্যই আবেদনকারীর বয়স কমপক্ষে ১৮+ হতে হবে।
- আপনি যদি ক্রিয়েটিভিটি প্রোগ্রামে সুইস করতে চান ঔ তার জন্য আপনাকে টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ডে এনরোল করতে হবে।
- এবং সর্বোপরি ইউজার একাউন্টগুলোর মধ্যে রাম্কিং অবশ্যই ভালো হতেই হবে।
আমাদের শেষ কথা
তাহলে বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে টিকটক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় আশা করি আপনারা জেনে গেছেন। আর বন্ধুরা আমার আর্টিকেলটি যদি আপনাকে ভালো লাগে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় আর্টিকেলটি শেয়ার করতে পারেন।
আর যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।
আরো পড়ুন